Bengali

কমলাকান্তের দপ্তর বড়বাজার

 

কমলাকান্তের দপ্তর বড়বাজার,কমলাকান্তের দপ্তর pdf,
কমলাকান্তের দপ্তর প্রশ্ন উত্তর,
কমলাকান্তের দপ্তর এর সমালোচনা,
কমলাকান্তের দপ্তর আমার মন pdf,
কমলাকান্তের দপ্তর প্রবন্ধ,
কমলাকান্তের দপ্তর বিড়াল,
কমলাকান্তের দপ্তর কোন শ্রেণীর রচনা,
কমলাকান্তের দপ্তর গ্রন্থের রচয়িতা কে,
কমলাকান্তের দপ্তর মনুষ্য ফল,
কমলাকান্তের দপ্তর কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়,
কমলাকান্তের দপ্তর প্রকাশকাল,
কমলাকান্তের দপ্তর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,
গীতিকাব্য প্রবন্ধ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উপন্যাস কয়টি,
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উপন্যাস,
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উপন্যাস মনে রাখার কৌশল,
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন উত্তর,
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রবন্ধ রচনা pdf,
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শেষ উপন্যাস,
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কমলাকান্তের দপ্তর বৈশিষ্ট্য,
কমলাকান্তের দপ্তর বড়বাজার,
কমলাকান্তের ভবের বাজারের দর্শন,
কমলাকান্তের বিদ্যার বাজারের দর্শন,
কমলাকান্ত সাহিত্যের বাজারের দর্শন,
 

কমলাকান্ত যখন থেকে নসীরামবাবুর ঘরে এসেছে সেদিন থেকে প্রসন্ন গোয়ালিনীর কাছ থেকে ক্ষীর, সর, দই, দুই খাচ্ছে। কমলাকান্তের ধারণা ছিল— প্রসন্ন পরলোকে সদগতির কামনায় পুণ্য সঞ্চয় করছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়। প্রসন্ন দাম চায়। প্রথম দিন যখন দুধ-দইয়ের দাম চাইল তখন কমলাকান্ত মনে করেছিল রসিকতা। দ্বিতীয় দিন বিস্মিত হয়েছিল। তৃতীয় দিন প্রসন্নকে গাল দিয়েছে। তারপর থেকেই প্রসন্ন দুধ, দই বন্ধ করে দিয়েছে।

কমলাকান্তের যুক্তি হল প্রসন্নর দুধ-দই আছে। কমলাকান্তের উদর আছে। সুতরাং প্রসন্নর কাজ কমলাকান্তকে দুধ-দই যোগানো। কমলাকান্তের কাজ খাওয়া। অবশ্য কমলাকান্ত স্বীকার করছে যে এখানে সব জিনিসই দাম দিয়ে কিনতে হয়। এখানে খাদ্যপেয়, বিদ্যাবুদ্ধি এমনকী ভালো কথাও মূল্য দিয়েই কিনতে হয়। যশ মান প্রভৃতি সামগ্রী অতি অল্পমূল্যেই ক্রীত হয়ে থাকে। ভালো সামগ্রী মূল্য দিয়ে কিনতে হয়, এই কথার একটা মানে আছে কিন্তু এখানে যে মন্দ সামগ্রী এমনকী বিষও মূল্য দিয়ে কিনতে হয়। অতএব এই সংসার একটি বৃহৎ বাজার—এখানে সবাই আপন আপন দোকান সাজিয়ে বসে আছে। এবং এই বাজারে দোকানদার এবং ক্রেতা উভয়ের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে কে কাকে ঠকাবে। কমলাকান্তের মতে সস্তায় কেনার জন্য চেষ্টাকেই জীবন বলে।

Read more কমলাকান্তের দপ্তর একটি গীত

কমলাকান্তের ভবের বাজারের দর্শন

ভেবেচিন্তে কমলাকান্ত আফিমের মাত্রা চড়ানোর পর জ্ঞাননেত্র ফুটল। তখনই ভবের বাজারের দর্শন ঘটল। কমলাকান্ত দেখতে পেল অসংখ্য দোকানদার দোকান সাজিয়ে বসে আছে আর অসংখ্য ক্রেতা ক্রয় করছে। কমলাকান্ত গামছা কাঁধে করে বাজার করতে বের হল। প্রথমেই গেল রূপের বাজারে। সেখানে দেখতে পেল পৃথিবীর রূপসীরা মাছের রূপ ধরে ঝুড়ি, চুপড়ির ভিতরে ঢুকে বসে আছে। তারা রুই কাতলা মৃগেল ইলিশ কই মাগুর পুঁটি হয়ে ক্রেতার জন্য লেজ আছড়াচ্ছে। মেছুনিরা নানান ভাষায় ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে চেষ্টা করছে। মাছের দাম জীবনসর্বস্ব। সে যে-কোন মাছই হোক না কেন। কমলাকান্ত ভেবে দেখল দু-চারদিন পরে তো মাছ পচে যাবে। তাই এত চড়াদাম দিয়ে কেনার কোন মানে হয় না। কমলাকান্ত সেখান থেকে সরে পড়ল।

Read also ‘বড়বাজার’ রচনায় ‘বিদ্যার বাজার’ ও সাহেবদের ‘এক্সপেরিমেন্টাল সায়েন্স’-এর দোকানে গিয়ে কমলাকান্ত চক্রবর্তী তাঁর অভিজ্ঞতার যে সরস বর্ণনা দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় বিস্তৃত কর।

কমলাকান্তের বিদ্যার বাজারের দর্শন

রূপের বাজারের পর কমলাকান্ত বিদ্যার বাজারে গেল। বিদ্যার বাজারে ফলমূল বিক্রি হচ্ছে। টিকিওয়ালা ব্রাহ্মণ ঝুনো নারিকেলের দোকান খুলে খরিদ্দার ডাকছে। এদের পশরার মধ্যে রয়েছে ঘটত্ব পটত্ব ণত্ন যত্ন ইত্যাদি। কমলাকান্ত ঝুনা নারিকেল কিনতে চাইল কিন্তু বিক্রেতা ব্রাহ্মণগণের কাছে দাম চাইল। বিক্রেতারা বললেন তারা নারিকেল না ছুলে ছোবড়া খান। শুনে কমলাকান্ত পাশের দোকানে গেল। সেখানে সাহেবরা নানারকম ফল বিক্রি করছে। তারা ব্রাহ্মণদের ঝুনা নারিকেল লুট করে এনে বিলাতি অস্ত্রে ছেদন করে খেতে লাগল।

কমলাকান্ত সাহিত্যের বাজারে গিয়ে দেখতে পেল বাল্মীকি প্রভৃতি ঋষিগণ অমৃতফল বিক্রি করছে। কমলাকান্ত বুঝতে পারল এগুলো সংস্কৃত সাহিত্য। কোথাও আনারস আঙুর প্রভৃতি সুস্বাদু ফল বিক্রি হচ্ছে—–সেগুলো পাশ্চাত্য সাহিত্য। একটা দোকানে গিয়ে দেখল শিশু এবং মেয়েরা ক্রয়-বিক্রয় করছে। কমলাকান্ত প্রশ্ন করে জানতে পারল এটা বাংলা সাহিত্যের দোকান। সেখানে দেখা গেল খবরের কাগজে জড়ানো কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে। তারপর কলুপটি গিয়ে দেখল তেলের ভাঁড় হাতে করে সারি সারি লোক বসে আছে এবং যাদের কাছ থেকে চাকরি বা অন্য কিছু আদায়ের সম্ভাবনা আছে তাদের পায়ে তেল মাখাচ্ছে।

Related ‘কমলাকান্তের দপ্তর’-এর হাস্যরস

তারপর যশের ময়রা পট্টিতে গেল। সেখানে সংবাদপত্র লেখকগণ গুড়ের সন্দেশের দোকান পেতে নগদ মূল্যে বিক্রি করছে এবং রাস্তার লোক ধরে ধরে গছিয়ে দিচ্ছে। দোকানদারেরা বিনা ছানায় শুধু গুড়ের সন্দেশ প্রস্তুত করে সস্তা দরে বিক্রি করছে। অন্যত্র রাজপুরুষেরা খেতাব খেলাতের দোকান পেতে বসে আছে। চাঁদা, সেলাম ইত্যাদি মূল্যে এগুলো বিক্রি হচ্ছে। ফলের দোকানে গিয়ে দেখল যশের পানশালা। অনন্ত যশ জীবন মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। বেঁচে থাকতে কেউ এই দোকানে প্রবেশ করতে পারবে না।

কমলাকান্ত বিচারের বাজারে গিয়ে দেখল ওটা আসলে কসাইখানা। বড় বড় জন্তুরা ছুটে পালাচ্ছে ছোট ছোট জন্তুরা ধরা পড়ে মরছে। কমলাকান্ত সেখান থেকে পালিয়ে গেল। হঠাৎ তার চটকা ভেঙে গেল, দেখল প্রসন্ন একবাটি ঘোল বিনামূল্যে খাবার জন্য সাধাসাধি করছে।

Back to top button

Adblock Detected

If you enjoy our content please support our site by disabling your adblocker. We depend on ad revenue to keep creating quality content for you to enjoy for free.