Bengali

শ্রীকান্ত উপন্যাসে মেজদার ‘দি রয়েল বেঙ্গল টাইগার’-এর প্রকৃত পরিচয় কী? রেখে দাও। তোমার ওটা অনেক কাজে লাগবে।” কার উক্তি? ‘ওটা’ কী? শ্রীকান্ত উপন্যাসের প্রথম পর্ব অবলম্বনে শরৎচন্দ্রের হাস্যরস সৃষ্টির দক্ষতার প্রতি আলোকপাত কর।

শ্রীকান্ত উপন্যাস এর মূলভাব,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের চরিত্র,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের চরিত্র,
শ্রীকান্ত চরিত্র বিশ্লেষণ,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের প্রশ্ন উত্তর,
শ্রীকান্ত উপন্যাস প্রথম পর্ব,
শরৎচন্দ্রের উপন্যাস গুলির নাম,
শরৎচন্দ্রের উপন্যাস,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের হাস্যরস,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের বিষয়বস্তু,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের প্রশ্ন উত্তর,
শ্রীকান্ত উপন্যাস পিডিএফ,
শ্রীকান্ত উপন্যাস প্রথম পর্ব ,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের বিখ্যাত উক্তি,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের অন্নদাদিদি চরিত্র,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের ইন্দ্রনাথ চরিত্র,
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন উত্তর,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের শ্রীকান্ত চরিত্র,
শ্রীকান্ত উপন্যাস,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের বিখ্যাত উক্তি,
শ্রীকান্ত উপন্যাস এর মূলভাব,
শ্রীকান্ত উপন্যাসের সারমর্ম,
শ্রীকান্ত প্রথম পর্ব pdf,

দি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রকৃত পরিচয় হলো—ছিনাথ বউরূপী বা শ্রীনাথ বহুরূপী। শ্রীনাথ বহুরূপীই রয়েল বেঙ্গল টাইগার সেজে এসেছিল।

রেখে দাও! তোমার ওটা অনেক কাজে লাগবে।”–পিসিমার উক্তি।

‘ওটা’ হচ্ছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ল্যাজ।

শ্রীকান্ত উপন্যাসের হাস্যরস

শ্রীকান্ত উপন্যাসের নানা ঘটনার মধ্যে সূক্ষ্ম হাস্যরস মিশ্রিত হয়ে আছে। নানান ঘটনা উপলক্ষে শরত্চন্দ্র মধুর হাস্যরস সৃষ্টি করেছেন। এই হাস্যরসই উপন্যাসকে সরস এবং সুখপাঠ্য করে তুলেছে। শ্রীকান্ত উপন্যাসের অধিকাংশ হাস্যরসই নির্মল হিউমার। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা অবশ্য রূপ ধারণ করেছে স্যাটায়ারের।

শ্রীকান্ত এবং অন্যান্য ভাইদের পাঠ্যাভাস চলত শ্রীকান্তর মেজদার তত্ত্বাবধানে। এই মেজদা দুবার ফেল করার পর তৃতীয় বারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তারই খবরদারিতে শ্রীকান্ত, ছোড়দা এবং যতীনদা পড়াশোনা করত। পাছে গোলমাল করে মেজদার পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটায় সেইজন্যে ছোট ছোট কাগজে বাইরে যাওয়া’, ‘নাক ঝাড়া’, ‘থুতু ফেলা’, ‘তেষ্টা পাওয়া’ প্রভৃতি লিখে রাখত। পড়ুয়ারা প্রয়োজনমতো কাগজ এগিয়ে দিত। মেজদা হিসেব মিলিয়ে মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করত আবেদন। এরকম পাঠাভ্যাস খুবই কৌতুককর নিঃসন্দেহে। এই পাঠ্যাভ্যাস সম্পর্কে শ্রীকান্তের মন্তব্যগুলিও কম কৌতুককর নয়। “কিন্তু মেজদার দুর্ভাগ্য, তাহার নির্বোধ পরীক্ষকগুলো তাঁহাকে চিনিতেই পারিল না।”

Read more কৃষ্ণকুমারী চরিত্র অথবা কৃষ্ণকুমারী চরিত্রের ট্র্যাজেডি আলোচনা কর।

এই রকম কঠোর নিয়মশৃঙ্খলার পাঠ্যাভ্যাসের মধ্যেও একদিন অত্যন্ত কৌতুককর পরিবেশের সৃষ্টি হল। শ্রীনাথ বহুরূপী বাঘ সেজে এসেছে। তার হুম শব্দ শুনে ছোড়দা ও যতীনদা গগনভেদী চিৎকার শুরু করেছে, মেজদা “আেঁ আঁ করে প্রদীপ উলটিয়ে চিৎ হয়ে পড়ে গেছে। পিসেমশাই দুই ছেলেকে বগলে নিয়ে ছেলেদের সঙ্গে প্রবল চিৎকার শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে দেউড়ির সিপাইরা চোর ভেবে রামকমল ভট্টাচার্যকে প্রহার করছে। তারপর ইন্দ্রনাথের প্রবেশ রয়েল বেঙ্গলের প্রকৃত স্বরূপ উদ্ঘাটন ও তারপরের বিবরণে যথেষ্ট নির্মল হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।

সখের থিয়েটার প্রসঙ্গেও হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই হাস্যরসের সঙ্গে করুণ রস এসে মিশেছে। স্টেজ বাঁধা হচ্ছে যিনি রামচন্দ্র সাজবেন তিনি শ্রীকান্তকে একটা ধরতে বলায় শ্রীকান্ত কৃতার্থ হয়েছিল। কিন্তু পরে তাকে চিনতে না পারায় শ্রীকান্তর মনে যে আঘাত লেগেছে তা শিশুমনের বেদনাকে ব্যক্ত করেছে। অভিনয়ের সময় বিশালদেহী মেঘনাদের সলম্ফ প্রবেশের ফলে স্টেজের যা অবস্থা হয়েছে এবং কোমরবন্ধ ছিঁড়ে যাওয়া ও তারপর মেঘনাদের ধনুক ফেলে দিয়ে বাঁহাতে প্যান্ট লুন চেপে ধরে যুদ্ধ—যথেষ্ট কৌতুকরসসঞ্চারী।

Read also ‘বড়বাজার’ রচনায় ‘বিদ্যার বাজার’ ও সাহেবদের ‘এক্সপেরিমেন্টাল সায়েন্স’-এর দোকানে গিয়ে কমলাকান্ত চক্রবর্তী তাঁর অভিজ্ঞতার যে সরস বর্ণনা দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় বিস্তৃত কর।

উপন্যাসের সপ্তম পরিচ্ছেদে নতুনদার আবির্ভাব ব্যঙ্গরস বা স্যাটায়ার সৃষ্টি করেছে। নতুনদার ব্যবহারের মধ্যে যে হামবড়া এবং শ্রীকান্ত ও ইন্দ্রনাথের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্যের ভাব ফুটে উঠেছে তাতে শ্রীকান্তের এই নতুন দাদাটির প্রতি পাঠক বিরূপ হয়ে ওঠে। তবে লেখক এই নতুন দাদাকে তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিয়েছেন। তারপর নতুন দাদার সম্ভাব্য ডেপুটির প্রাপ্তি নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তাও তাৎপর্যপূর্ণ।

শ্রীকাত্তের সন্ন্যাস গ্রহণ এবং গুরুদেবের সঙ্গে কথোপকথনের মধ্যে আমরা কৌতুকরস পাই। সাধুকে শ্রীকান্ত বলছে, “বাবা, মহাভারতে লেখা আছে, মহাপাপিষ্ঠ জগাই-মাধাই বশিষ্ঠ মুনির পা ধরিয়া স্বর্গে গিয়াছিলেন।” এই কৌতুকরস যথেষ্ট হাস্যোদ্রেককারী।

এইভাবে শ্রীকান্ত উপন্যাসের নানা স্থানে ছড়ানো স্নিগ্ধ কৌতুক পাঠকের মনকে নির্মল হাস্যরসে পূর্ণ করে দেয়।

Back to top button

Adblock Detected

If you enjoy our content please support our site by disabling your adblocker. We depend on ad revenue to keep creating quality content for you to enjoy for free.